Indianconstitution
রাজ্যপালের ক্ষমতা ও কার্যাবলী: (Governor of India).
ভারতের রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রের মত সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছে। উপরাষ্ট্রপতির মতো রাজ্যপাল রাজ্যের নিয়মতান্ত্রিক শাসক প্রধান। সংবিধানের ১৫৫ নং ধারায় ভারতের রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপাল কে নিয়োগ করেন।
রাজ্যপালের ক্ষমতা ও কার্যাবলী:
রাজ্যপালের শাসন সংক্রান্ত ক্ষমতা:
সংবিধান অনুসারে রাজ্যপাল রাজ্যের শাসন বিভাগের প্রধান হিসেবে-
- রাজ্যের শাসন সংক্রান্ত যাবতীয় ক্ষমতার তত্ত্বগতভাবে অধিকারী। রাজ্যের যাবতীয় প্রশাসনিক কার্য তাঁর নামে সম্পাদিত হয়।
- রাজ্যের শাসনকার্য যাতে সঠিকভাবে সম্পাদিত হয় সেইজন্য প্রয়োজনীয় নিয়মাবলি প্রণয়ন করতে পারেন।
- নিজ রাজ্যে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য বা চ্যান্সেলার হিসেবে রাজ্যপালগণ কার্য সম্পাদন করেন।
রাজ্যপালের আইন সংক্রান্ত ক্ষমতা:
অঙ্গরাজ্যের রাজ্যপাল রাজ্য আইনসভার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে কাজ করে যেমন-
- মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে রাজ্য আইনসভার অধিবেশন আহ্বান করতে কিংবা স্থগিত রাখতে এবং প্রয়োজনে রাজ্য বিধানসভা ভেঙে দিতে পারেন।
- যেসব রাজ্যের আইনসভা এককক্ষবিশিষ্ট সেখানে বিধানসভা এবং যেসব রাজ্যের আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সেখানে রাজ্য বিধানসভামণ্ডলীর যে - কোনো কক্ষ বা উভয় কক্ষের যৌথ - অধিবেশনে ভাষণ দিতে পারেন।
রাজ্যপালের অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতা:
- রাজ্যপালের সম্মতি ছাড়া রাজ্য আইনসভায় কোনো ব্যয়বরাদ্দের দাবি পেশ (২০৫ নং ধারা), কিংবা কোনো অর্থ বিল উত্থাপন (২০৭ নং ধারা) করা যায় না।
- রাজ্যের বাজেট বা বার্ষিক আয়ব্যয়ের বিবরণ তিনি অর্থমন্ত্রী মারফত আইনসভার কাছে উত্থাপন করেন (২০২ নং ধারা)।
রাজ্যপালের বিচার সংক্রান্ত ক্ষমতা:
আইনভঙ্গের অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীর দণ্ডাদেশ হ্রাস করা, স্থগিত রাখা, এমনকি তাকে ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা রাজ্যপালের রয়েছে (১৬১ নং ধারা)। তবে মৃত্যু দণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ক্ষমা প্রদর্শনের কোনো ক্ষমতা তাঁর নেই।
রাজ্যপালের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা:
রাজ্যপালের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা:
সংবিধানের ১৬৩ নং ধারায় রাজ্যপালকে কিছু বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। একে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা বলা হয়। এই ক্ষমতায় রাজ্যপালের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ, বিধানসভা ভেঙে দেওয়া প্রভৃতি ক্ষেত্রে রাজ্যপাল স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা ভোগ করেন।
রাজ্যপালের পদমর্যাদা:
তত্ত্বগতভাবে অঙ্গরাজ্যের শাসন বিভাগের প্রধান হলেন রাজ্যপাল। বাস্তবে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা অনুসারে তিনি নিয়মতান্ত্রিক শাসক এবং মন্ত্রীসভা হল প্রকৃত শাসক। মন্ত্রীসভার পরামর্শে রাজ্যপালের নামে রাজ্যের শাসন পরিচালিত হয়। সরোজিনী নাইডু রাজ্যপালকে ‘সোনার খাঁচায় বন্দি পাখি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন । আবার পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল নুরুল হাসানের মতে, “রাজ্যপালের পদ অর্থহীন নয়, রাজ্যপাল সংবিধান অনুসারে বহু প্রয়োজনীয় কার্যাবলি সম্পাদন করতে পারেন।” তা ছাড়া সংবিধানের ১৬৩ (২) নং ধারা অনুসারে রাজ্যপাল যখন স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করেন এবং কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন, তখন তিনি মন্ত্রীসভার পরামর্শ অনুযায়ী চলতে বাধ্য নন। এই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপালকে সম্পূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক শাসক বলে অভিহিত করা চলবে না। তবে রাজ্যপালের পদমর্যাদা তাঁর ব্যক্তিত্ব ও বিচক্ষণতার ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে।
রাজ্যপালের পদমর্যাদা:
তত্ত্বগতভাবে অঙ্গরাজ্যের শাসন বিভাগের প্রধান হলেন রাজ্যপাল। বাস্তবে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা অনুসারে তিনি নিয়মতান্ত্রিক শাসক এবং মন্ত্রীসভা হল প্রকৃত শাসক। মন্ত্রীসভার পরামর্শে রাজ্যপালের নামে রাজ্যের শাসন পরিচালিত হয়। সরোজিনী নাইডু রাজ্যপালকে ‘সোনার খাঁচায় বন্দি পাখি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন । আবার পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল নুরুল হাসানের মতে, “রাজ্যপালের পদ অর্থহীন নয়, রাজ্যপাল সংবিধান অনুসারে বহু প্রয়োজনীয় কার্যাবলি সম্পাদন করতে পারেন।” তা ছাড়া সংবিধানের ১৬৩ (২) নং ধারা অনুসারে রাজ্যপাল যখন স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করেন এবং কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন, তখন তিনি মন্ত্রীসভার পরামর্শ অনুযায়ী চলতে বাধ্য নন। এই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপালকে সম্পূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক শাসক বলে অভিহিত করা চলবে না। তবে রাজ্যপালের পদমর্যাদা তাঁর ব্যক্তিত্ব ও বিচক্ষণতার ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে।
0 Comments: