জুলাই বিপ্লবের কারণ:
ফরাসি সম্রাট অষ্টাদশ লুইয়ের মৃত্যুর (১৮২৪ খ্রি) পর তাঁর ভাই সম্রাট দশম চার্লস ( ১৮২৪-৩০ খ্রিঃ) ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেন।
তীব্র প্রতিক্রিয়াশীল দশম চার্লসের বিরুদ্ধে ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে জুলাই বিপ্লব ঘটে। এই বিপ্লবের বিভিন্ন কারণ ছিল—মধ্যপন্থা নীতি বাতিল:
পূর্ববর্তী সম্রাট অষ্টাদশ লুই - এর মধ্যপন্থা নীতি বাতিল করে দশম চার্লস ফ্রান্সে নিরঙ্কুশ স্বৈরতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র ও ক্যাথোলিক গির্জার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করেন। বহু সাংবাদিককে কারারুদ্ধ করা হয়।
ধর্মীয় উদ্যোগ:
দশম চার্লস 'ধর্মবিরোধী আইন’ (১৮২৭ খ্রিঃ) পাস করে—
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর গির্জার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করেন।
- গির্জার বিরুদ্ধে সমালোচনার অধিকার কেড়ে নেন।
- জেসুইট নামক নির্বাসিত ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকেদের দেশে ফিরিয়ে এনে উচ্চ রাজপদে নিয়োগ করেন।
ক্ষতিপূরণ:
বিপ্লবের সময় ফ্রান্সের দেশত্যাগী অভিজাতদের জমি বাজেয়াপ্ত করে তা কৃষকদের বিতরণ করা হয়েছিল। দশম চার্লস ‘অ্যাক্ট অব জাস্টিস’ নামে এক আইন পাশ করে সেই বাজেয়াপ্ত।
জুলাই অর্ডিন্যান্স:
দশম চার্লস জুলাই অর্ডিন্যান্স (২৫ জুলাই, ১৮৩০ খ্রিঃ) জারি করে—
- নির্বাচিত আইনসভা ভেঙে দেন।
- সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেন।
- বুর্জোয়া শ্রেণির ভোটাধিকার কেড়ে নেন।
- অষ্টাদশ লুই - এর আমলের সনদ বাতিল করে। এই অর্ডিন্যান্স ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সে জুলাই বিপ্লবের সূত্রপাত হয়।
বিপ্লবের ব্যাপকতায় সম্রাট দশম চার্লসের পতন ঘটে এবং অর্লিয়েন্স বংশীয় লুই ফিলিপ ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেন।
ফ্রান্সে জুলাই বিপ্লবের ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়েছিল। যেমন—
স্বৈরতন্ত্র ধ্বংস:
ঐতিহাসিক গর্ডন ক্রেইগ বলেছেন যে, দশম চার্লসের আমলে দেশে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে চেষ্টা চালানো হয়েছিল তা জুলাই বিপ্লব ধ্বংস করে দেয়।
ফরাসি বিপ্লবের পরিপুরক:
জুলাই বিপ্লব অভিজাততন্ত্র, যাজকতন্ত্র ও সামন্ততন্ত্র ধ্বংস করে ফ্রান্সে সাম্য, ধর্মনিরপেক্ষতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রভৃতি গণতান্ত্রিক নীতিগুলি স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠা করে।
বুর্জোয়াদের আধিপত্য:
জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্রান্সে যাজক ও অভিজাতদের আধিপত্য ধ্বংস হলে বুর্জোয়াদের রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তাঁদের আমলে ফ্রান্সে শিল্পবিপ্লবের সূচনা হয়।
বুরবোঁ বংশের পতন:
ফ্রান্সে স্বৈরাচারী বুরবোঁ বংশের শাসনের অবসান ঘটে এবং অর্লিয়েন্স বংশীয় লুই ফিলিপ ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেন। এই বংশের অধীনে ফ্রান্সে নিয়মতান্ত্রিক রাজা প্রতিষ্ঠিত হয়।
ন্যায্য অধিকার নীতির অসারতা:
জুলাই বিপ্লব প্রমাণ করে যে, ন্যায্য অধিকারের ভিত্তিতে নয় , জনগণের প্রতিনিধি হিসেবেই রাজা সিংহাসন লাভের অধিকারী।
জাগরণ:
জুলাই বিপ্লব একদিকে যেমন ফ্রান্সের শ্রমিক শ্রেণির চিন্তার জাগরণ ঘটায়, অন্যদিকে তেমনি ভিক্টর হুগো, জর্জ স্যান্ড, সাঁ সিমোঁ প্রমুখ তাদের রচনায় দেশের বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের দুর্দশার কাহিনি ফুটিয়ে তোলেন।
ঐতিহাসিক লিপসনের মতে, “জুলাই বিপ্লব ফ্রান্সের ইতিহাসে খুব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রচনা করে।” এই বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে ফ্রান্সের রাজবংশের পরিবর্তন ঘটে, জনসাধারণের লুপ্ত অধিকার ফিরে আসে। জুলাই বিপ্লব ফ্রান্সের এক নতুন ঊষার সূচনা করে।
স্বৈরতন্ত্র ধ্বংস:
ঐতিহাসিক গর্ডন ক্রেইগ বলেছেন যে, দশম চার্লসের আমলে দেশে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে চেষ্টা চালানো হয়েছিল তা জুলাই বিপ্লব ধ্বংস করে দেয়।
ফরাসি বিপ্লবের পরিপুরক:
জুলাই বিপ্লব অভিজাততন্ত্র, যাজকতন্ত্র ও সামন্ততন্ত্র ধ্বংস করে ফ্রান্সে সাম্য, ধর্মনিরপেক্ষতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রভৃতি গণতান্ত্রিক নীতিগুলি স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠা করে।
বুর্জোয়াদের আধিপত্য:
জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্রান্সে যাজক ও অভিজাতদের আধিপত্য ধ্বংস হলে বুর্জোয়াদের রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তাঁদের আমলে ফ্রান্সে শিল্পবিপ্লবের সূচনা হয়।
বুরবোঁ বংশের পতন:
ফ্রান্সে স্বৈরাচারী বুরবোঁ বংশের শাসনের অবসান ঘটে এবং অর্লিয়েন্স বংশীয় লুই ফিলিপ ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেন। এই বংশের অধীনে ফ্রান্সে নিয়মতান্ত্রিক রাজা প্রতিষ্ঠিত হয়।
ন্যায্য অধিকার নীতির অসারতা:
জুলাই বিপ্লব প্রমাণ করে যে, ন্যায্য অধিকারের ভিত্তিতে নয় , জনগণের প্রতিনিধি হিসেবেই রাজা সিংহাসন লাভের অধিকারী।
জাগরণ:
জুলাই বিপ্লব একদিকে যেমন ফ্রান্সের শ্রমিক শ্রেণির চিন্তার জাগরণ ঘটায়, অন্যদিকে তেমনি ভিক্টর হুগো, জর্জ স্যান্ড, সাঁ সিমোঁ প্রমুখ তাদের রচনায় দেশের বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের দুর্দশার কাহিনি ফুটিয়ে তোলেন।
ঐতিহাসিক লিপসনের মতে, “জুলাই বিপ্লব ফ্রান্সের ইতিহাসে খুব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রচনা করে।” এই বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে ফ্রান্সের রাজবংশের পরিবর্তন ঘটে, জনসাধারণের লুপ্ত অধিকার ফিরে আসে। জুলাই বিপ্লব ফ্রান্সের এক নতুন ঊষার সূচনা করে।
0 মন্তব্যসমূহ