জোয়ার ও ভাটা কি?
প্রধানত চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণ বলের প্রভাবে সাগর মহাসাগরের জল নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর (দিনে দুবার করে) এক জায়গায় ফুলে ওঠে এবং অন্য জায়গায় নেমে যায়। চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণ বলের প্রভাবে সমুদ্র জলরাশির এই নিয়মিতভাবে ফুলে ওটাকে জোয়ার ও নেমে যাওয়াকে ভাটা বলা হয়।জোয়ার ভাটা সৃষ্টির কারণ:
সমুদ্র বিজ্ঞানীদের মতে প্রধানত দুটি কারণে জোয়ার-ভাটা সৃষ্টি হয়। যথা-
পৃথিবীর আবর্তন গতি: পৃথিবী নিজ মেরু রেখার চারিদিকে নির্দিষ্ট গতিতে অনবরত আবর্তন করে চলেছে। আবর্তন গতির ফলে ভূপৃষ্ঠে একটি বিকর্ষণ শক্তি বা কেন্দ্রাতিগ বল সৃষ্টি হয়। এই বলের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠের বস্তু সমূহ বাইরের দিকে ছিটকে বেরিয়ে যেতে চায়।এই কারণে পৃথিবীর আবর্তন গতি জনিত কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠের বা সাগর মহাসাগরের জলরাশি বাইরের দিকে বিক্ষিপ্ত হয়। এইভাবে সমুদ্রে জোয়ার ভাটার সৃষ্টি হয়।
পৃথিবীর উপর চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণ: নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র অনুসারে সকল বস্তুুুু পরস্পর পরস্পরকে আকর্ষণ করে। এই মহাকর্ষ বলের প্রভাবে পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে এবং চন্দ্র পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে বেড়ায়। এক্ষেত্রে চন্দ্র ও সূর্য উভয়েই পৃথিবীকে আকর্ষণ করে। সূর্য চন্দ্রের থেকে অনেক বড় হলেও চন্দ্র পৃথিবীর কাছে অবস্থান করে বলে পৃথিবীর উপর সূর্যের তুলনায় চন্দ্রের আকর্ষণ বল বেশি কার্যকরী হয়। এই কারণে প্রধানত চন্দ্রের আকর্ষণে পৃথিবী পৃষ্ঠের জলরাশি ফুলে ওঠে অর্থাৎ জোয়ার হয়। পৃথিবীর জলরাশির পরিমাণ সুনির্দিষ্ট হওয়ায় চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণ প্রভাবিত স্থানের দিকে জলরাশি চলে যাওয়ায় কম আকর্ষণ যুক্ত স্থানের দিকে ভাটার সৃষ্টি হয়।
0 Comments: