INFO Breaking
Live
wb_sunny

Breaking News

উনবিংশ শতকের বাংলায় নব্যবঙ্গ আন্দোলনের ভূমিকা:

উনবিংশ শতকের বাংলায় নব্যবঙ্গ আন্দোলনের ভূমিকা:


হিন্দু কলেজের তরুণ শিক্ষক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও তৎকালীন সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন, যা ‘নব্যবঙ্গ আন্দোলন’ নামে অভিহিত করা হয় এবং তাঁর অনুগামীরা  ‘ইয়ং বেঙ্গল’ (Young Bengal) বা ‘নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী’ নামে পরিচিত।

মাত্র ১৭ বছর বয়সে ডিরোজিও হিন্দু কলেজের শিক্ষক নিযুক্ত হন। তার দেশপ্রেম, যুক্তিবাদ, সত্যের প্রতি নিষ্ঠা তার প্রতি ছাত্রদের আকৃষ্ট করেছিল। তার আকর্ষণে হিন্দু কলেজের অনেক ছাত্র তাঁর অনুগামী হয়ে উঠেছিল। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন রামতনু লাহিড়ি, রামগোপাল ঘোষ, কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, রসিককৃষ্ণ মল্লিক, রাধানাথ শিকদার প্রমুখ।

নব্যবঙ্গ আন্দোলনের কার্যকলাপ:
ডিরোজিও ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ‘অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সমিতি গঠন করে হিন্দুসমাজের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের অনুগামী যারা তাদের উৎসাহিত করতেন। তিনি ‘পার্থেনন’ পত্রিকার মাধ্যমে সমিতির মতামত প্রচার করেন। ডিরোজিও এবং তার অনুগামীরা নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে ছিলেন-

নব্যবঙ্গ আন্দোলনের ইতিবাচক দিক:
  • নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী জাতিভেদ  প্রথা, অস্পৃশ্যতা, নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের তীব্র সমালোচনা করে।
  • তারা হিন্দুসমাজের রক্ষণশীলতাকে আক্রমণ করার জন্য প্রকাশ্যে ব্রাত্মণের পৈতা ছিড়ে  দিতেন, এমনকি  নিষিদ্ধ  মাংসও  খেতেন।

নব্যবঙ্গ আন্দোলনের নেতিবাচক দিক:
ডিরোজিও এবং তার অনুগামীরা তৎকালীন সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন কুসংস্কারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন চালিয়েছিল তার মধ্যে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল-

  • ব্রিটিশ বিরোধি মনোভাবের অভাব।
  • শহর কেন্দ্রিক আন্দোলন।
  • পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রতি অন্ধ বিশ্বাস।

    নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীর কার্যকলাপ হিন্দু সমাজে প্রবল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, তবে তাদের আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি ডিরোজিও-এর মৃত্যুর  কিছুকাল পরে আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে। তাই পরিশেষে বলা যায় যে, দারুন উম্মাদনা নিয়ে নব্যবঙ্গ আন্দোলন শুরু হলেও এই সমস্ত সীমাবদ্ধতা বা নেতিবাচক দিকগুলো কারণে নব্যবঙ্গ আন্দোলন ব্যর্থ হয়ে গিয়েছিল। তাসত্ত্বেও একথা অনস্বীকার্য যে,তাদের খাদহীন স্বদেশপ্রেম ও কুসংস্কার বিরোধী মনোভাব ভারতীয় সমাজকে অনেকটাই অনুপ্রাণিত করেছিল।

0 Comments: