INFO Breaking
Live
wb_sunny

Breaking News

নারী শিক্ষার প্রসারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান:

নারী শিক্ষার প্রসারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান:


বাংলাদেশে নারী শিক্ষার বিস্তারে যে সকল মনীষী নিরলস প্রয়াস চালিয়েছিলেন সমাজসংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তাদের মধ্যে স্মরণীয়। ইতিপূর্বে খ্রিস্টান মিশনারি ও কিছু উদার ইংরেজের ব্যক্তিগত উদ্যোগে নারী শিক্ষার সূচনা হলেও বিদ্যাসাগরই ছিলেন বাংলা তথা ভারতের নারী শিক্ষা বিস্তারের পথিকৃৎ।


উদ্দেশ্য: নবজাগরণের প্রতিমূর্তি এই সংস্কৃত পণ্ডিত উপলব্ধি করেছিলেন একমাত্র শিক্ষার মাধ্যমেই কুসংস্কারাচ্ছন্ন ভারতীয় নারীর মুক্তিলাভ সম্ভব। নারীর উন্নতি ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।

হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়: ব্রিটিশ সরকারের আইন সচিব ড্রিঙ্কওয়াটার বিথুন ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে ‘হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়' প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হলে বিদ্যাসাগর তাকে সাহায্য করেন। এটি ছিল ভারতের প্রথম বালিকা বিদ্যালয়। তিনি ছিলেন এই বিদ্যালয়ের সম্পাদক। বর্তমানে এটি ‘বেথুন স্কুল’ নামে পরিচিত।

স্ত্রী-শিক্ষা সম্মিলনী গঠন: নারীদের মধ্যে শিক্ষা সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তিনি বর্ধমান, হুগলি, মেদিনীপুর প্রভৃতি জেলায় গড়ে তোলেন স্ত্রী-শিক্ষা সম্মিলনী। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তিনি নারী শিক্ষার সপক্ষে লেখালেখি শুরু করেন। গ্রামে গ্রামে ঘুরে অভিভাবকদের বুঝিয়ে ছাত্রী সংগ্রহের নিরলস প্রচেষ্টা চালান।

বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন: ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে উডের নির্দেশনামায় স্ত্রী-শিক্ষা বিস্তারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বাংলার ছোটোলাট স্যার ফ্রেডারিক হ্যালিডে কর্তৃক ঈশ্বরচন্দ্র দক্ষিণবঙ্গের বিদ্যালয় পরিদর্শক নিযুক্ত হন। স্ত্রী-শিক্ষায় সরকারের আগ্রহ দেখে তিনি ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালে মাত্র সাত মাসের মধ্যে নিজ ব্যয়ে নদিয়া, বর্ধমান, হুগলি ও মেদিনীপুর জেলায় ৩৫টি বিদ্যালয় স্থাপন করেন। এগুলিতে প্রায় ১৩০০ ছাত্রী পড়াশুনো করতো। কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন-এর নতুন ডিরেক্টর গর্ডন ইয়ং নতুন স্কুলগুলিকে অর্থ বরাদ্দ করতে অস্বীকার করলে তিনি পরিদর্শক ও সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ পদে ইস্তফা দেন। তবে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালিয়ে বিদ্যালয়গুলির জন্য কিছু আর্থিক সহায়তা আদায় করেন।

মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন: বিদ্যাসাগর নিজ উদ্যোগে ও খরচে কলকাতায় ‘মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এটি ‘বিদ্যাসাগর কলেজ’ নামে পরিচিত।

ভগবতী বিদ্যালয়: মাতা ভগবতী দেবীর স্মৃতিতে তিনি ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে নিজ জন্মভূমি বীরসিংহ গ্রামে ভগবতী বিদ্যালয় স্থাপন করেন।
     নারীমুক্তি আন্দোলনের ক্ষেত্রে নারীশিক্ষার প্রসার বিদ্যাসাগরের সবথেকে সার্থক আন্দোলন। নারীসমাজের উন্নতির জন্য ধর্মশাস্ত্রের উপর বেশি জোর দেন।

0 Comments: