
১. হিমবাহ (Glacier) কাকে বলে?
উঃ- বিশালাকার বরফের স্তূপ অভিকর্ষের টানে ধীরে ধীরে নীচের দিকে নেমে এলে তাকে হিমবাহ বলে।২. হিমরেখা (Iceline) কাকে বলে?
উঃ- ভূপৃষ্ঠের যে সীমারেখার উপর সারাবছর তুষার জমে থাকে অথবা যার নীচে তুষার গলে জলে পরিণত হয় তাকে হিমরেখা বলে।
৩. হিমশৈল (Iceberg) কাকে বলে?
উঃ- সমুদ্রজলে ভাসমান বরফের স্তূপকে হিমশৈল বলে। হিমশৈলের মাত্র ১/১২ অংশ জলের উপর ভেসে থাকে। সাধারণত মহাদেশীয় হিমবাহ বিস্তৃত হয়ে সমুদ্রের নিকটে চলে আসে।
৪. বার্গমুন্ড কাকে বলে?
উঃ- উঁচু পর্বত থেকে উপত্যকার মধ্য দিয়ে হিমবাহ নামার সময় পর্বতগাত্রের মধ্যে যে সংকীর্ণ ফাঁকের সৃষ্টি হয় তাকে বার্গসুন্ড বলে।
৫. করি বা সার্ক কাকে বলে?
উঃ- পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহ উৎপাটন ও অবঘর্ষ প্রক্রিয়ার ক্ষয় করে হাতলঠুক্ত চেয়ার বা অ্যাস্পিথিয়েটারের মতো ভূমিরূপ সৃষ্টি করে। একে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে করি, ফ্রান্সে সার্ক, নরওয়েতে বন, ওয়েলসে কার ভলে।
৬. হিমসিঁড়ি বা হিমসোপান কাকে বলে?
উঃ- হিমবাহ অধ্যুষিত অঞ্চলে ক্ষয়কার্যের ফলে উপত্যকা সিঁড়ি বা ধাপের সৃষ্টি হয় তাকেই হিমসিঁড়ি বা হিমসোপান বলে। হিমসিঁড়ির নিম্নপ্রান্ত থেকে উত্থিত খাড়া অংশ হল রাইজার। পশ্চাৎমুখী ঢালের, ধাপের সমতল অংশ হল ট্রেড। রাইজার ও ট্রেডের মধ্যবর্তী অংশটিকে রিগেল বলে। সিঁড়ি অংশের হ্রদ প্যাটানস্টার হ্রদ নামে পরিচিত।
৭. ঝুলন্ত উপত্যকা (Hanging Valley) কাকে বলে?
উঃ- প্রধান হিমবাহের সাথে ছোটো ছোটো হিমবাহ এসে মিলিত হয়। প্রধান হিমবাহ আকারে বড়ো হওয়ায় তার দ্বারা সৃষ্ট উপত্যকা ক্ষুদ্র উপহিমবাহ সৃষ্ট উপত্যকা অপেক্ষা অধিক গভীর হয়। এরূপ অবস্থায় ক্ষুদ্রাকার হিমবাহ উপত্যকা মনে হয় যেন প্রধান হিমবাহ উপত্যকার উপর ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। একে ঝুলন্ত উপত্যকা বলে।
৮. ক্র্যাগ ও টেল কাকে বলে?
উঃ- উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহ প্রবাহপথে বৃহৎ ও উঁচু শিলা অবস্থান করলে তা হিমবাহের ক্ষয়কার্য থেকে নরম শিলাকে রক্ষা করে। ফলে বৃহৎ ও কঠিন শিলাখণ্ডের উঁচু ঢিবির মতো অবস্থান করে, একে ক্র্যাগ এবং পিছনের শিলাস্তরকে টেল বলে।
৯. আবর্তরেখা (Grooving) কাকে বলে?
উঃ- পার্বত্য অংশে কোমল শিলাস্তরের উপর দিয়ে হিমবাহ প্রবাহিত হওয়ার সময় ক্ষয়কার্যের ফলে শিলাস্তরে সুদীর্ঘ ও সুগভীর গর্তের সৃষ্টি হয়। একে আবর্তরেখা বলে।
১০. গ্রাবরেখা (Moraine) কাকে বলে?
উঃ- হিমবাহের ক্ষয়জাত দ্রব্যগুলি হিমবাহের সাথে বাহিত হয়ে উপত্যকার বিভিন্ন অংশে সঞ্চিত হয়ে যে রেখা বা ভূমিরূপ সৃষ্টি করে তাকে গ্রাবরেখা বলে।
১১. ড্রামলিন কাকে বলে?
উঃ- বিভিন্ন আকৃতির শিলাখণ্ড, নুড়ি, কাঁকর, বালি, কাদা হিমবাহ দ্বারা বাহিত হয়ে কোনো স্থানে সঞ্চিত হলে উলটানো নৌকো বা উলটানো ঝুড়ি সদৃশ যে ভূমিরূপ সৃষ্টি হয় তাকে ড্রামলিন বলে।
১২. বোল্ডার ক্লে বা টিল বহিধৌত সমভূমি (Outwash Plain) কাকে বলে?
উঃ- হিমবাহের প্রান্তদেশে বরফ যেখানে গলে যায় সেখানে প্রচুর পরিমাণে প্রস্তরখণ্ড, নুড়ি, পলি, বালি সঞ্চিত হয়। পর্বতের পাদদেশে হিমবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে গঠিত এরূপ সমভূমিকে বহিধৌত সমভূমি বলে।
0 Comments: