
হুগলির শ্রীরামপুর মিশনারিদের বহু কৃতিত্বের নিদর্শন আছে। এসব কৃতিত্বের অন্যতম হল ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা ও প্রকাশনা। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা প্রকাশনার মাধ্যমে শ্রীরামপুর মিশন শিক্ষাবিস্তার ও সমাজ চেতনা সৃষ্টিতে বিশেষ অবদান রেখেছিল।
ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা: জোসুয়া মার্শম্যান, উইলিয়ম ওয়ার্ড ও উইলিয়ম কেরি শ্রীরামপুরে ব্যাপটিস্ট মিশন প্রতিষ্ঠা করেন ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি। এদের মধ্যে উইলিয়ম কেরি একটি কাঠের পুরাতন ছাপাখানা কিনে ওই একই বছরে প্রতিষ্ঠা করেন শ্রীরামপুর মিশন। পরে লোহার ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮২০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মিশনের ছাপাখানার সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮টি।
মুদ্রণ: শ্রীরামপুর মিশন ছাপাখানায় প্রথমে ইংরেজি ভাষায় কাঠের হরফের ব্লক তৈরি করে ছাপা হত। পরে ধাতুর ইংরেজি ও বাংলা হরফ তৈরি করা হয়। এ সময়ে হরফ তৈরিতে পঞ্চানন কর্মকার বিখ্যাত ছিলেন। কেরি তাঁকে মিশনে নিয়োগ করেন। মিশনের ছাপাখানার কম্পজিটার ছিলেন গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য।
প্রকাশনা: শ্রীরামপুর মিশন বহু গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা প্রকাশ করে। তারা প্রথমে বাইবেল প্রকাশ করে। ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত বাইবেল ছাড়াও ২৬টি আঞ্চলিক ভাষায় বাইবেল ছাপা হয়। ৩৬ টি বাংলা হরফে ও ১ টি সংস্কৃত হরফে লেখা গ্রন্থ এবং এগুলির ১২ টি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। এসময় গড়ে ওঠা স্কুলকলেজের বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্যবই ছাপা ও প্রকাশের কাজও এখানে করা হত। দিগদর্শন (এপ্রিল ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দ) সমাচার দর্পণ (মে ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দ) ফ্রেন্ড অফ ইন্ডিয়া পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এইভাবে বিদেশি উদ্যোগে বাংলা ও ইংরেজি হরফে বই পত্রপত্রিকা ছাপা ও প্রকাশিত হতে থাকে। এক্ষেত্রে শ্রীরামপুর মিশনারিরা বিশেষ অবদান রাখেন।
0 Comments: