
History
প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে সাহিত্যিক উপাদানগুলির গুরুত্ব আলোচনা করো। (Discuss the importance of literary elements in the history of ancient India.)
প্রাচীন ভারতের ইতিহাস সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে সাহিত্যিক উপাদানগুলি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। এক্ষেত্রে দেশীয় ও বৈদেশিক উভয় প্রকার সাহিত্যের কথাই বলতে হয়। তবে সাহিত্যিক উপাদানগুলির মধ্যে কিছু সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করা যায়। যেমন- কোনো রাজা বা রাজবংশের প্রতি অতিরিক্ত পক্ষপাত। তা স্বত্তেও ঐতিহাসিকগণ ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে সাহিত্যিক উপাদানগুলিকে যুক্তিসঙ্গতভাবে ব্যবহার করেছেন।
সাহিত্যিক উপাদান (The Literary Elements):সাহিত্যিক উপাদান মূলত দুই ভাগে বিভক্ত:
- দেশীয় সাহিত্য।
- বৈদেশিক বিবরণ।
দেশীয় সাহিত্যকেও প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা যায়—
ধর্মীয় গ্রন্থ (Sacred literature):
প্রাচীন ভারতের অধিকাংশ গ্রন্থ ধর্মকে ভিত্তি করে লেখা। হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলির মধ্যে বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, রামায়ন, মহাভারত, বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ ত্রিপিটক ও জাতক এবং জৈন ধর্মগ্রন্থ কল্পসুত্র ও পরিশিষ্ট পর্বন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন স্মৃতিশাস্ত্রগুলি যেমন, 'নারদ স্মৃতি', 'বৃহস্পতি স্মৃতি', 'মনুস্মৃতি' থেকে প্রাচীন ভারতের আর্থসামাজিক তথ্য সম্পর্কে একটা ধারনা উপলব্ধি করা যায়।
ধর্মনিরপেক্ষ গ্রন্থ (Secular Literature):
আইন, বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা, ব্যাকরণ প্রভৃতি বিষয়ের উপর যে সমস্ত বই লেখা হয়েছিল সে গুলিকে প্রাচীন ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ গ্রন্থ বলা হয়। এইগুলির মধ্যে কৌটিল্যের 'অর্থশাস্ত্র', পাণিনির 'অষ্টাধ্যায়ী', পতঞ্জলির 'মহাভাষ্য', ভাসের 'স্বপ্নবাসবদত্তা', শূদ্রকের 'মৃচ্ছকটিকম' বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বিশাখদত্তের 'মুদ্রারাক্ষস' কালিদাসের 'অভিজ্ঞান শকুন্তলম' ও 'মালবিকাগ্নিমিত্রম' প্রভৃতি নাটক থেকে ইতিহাসের বহু তথ্য সংগৃহিত হয়।
জীবন চরিত (Biography):
প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন রাজাদের জীবনচরিতগুলির মধ্যে বাণভট্ট রচিত 'হর্ষচরিত', সন্ধ্যাকর নন্দী রচিত 'রামচরিত' বিলহন রচিত 'বিক্রমাঙ্কদেবচরিত' বাকপতি রচিত 'গৌড়বহ' প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এই জীবনচরিতগুলি মূলত রাজাদের সভাকবিদের লেখা বলে পক্ষপাত দোষে দুষ্ট।
আঞ্চলিক ইতিহাস:
স্থানীয় বা আঞ্চলিকভাবে রচিত গ্রন্থের মধ্যে কাশ্মীরের উপর লিখিত কলহন রচিত 'রাজতরঙ্গিনী' সোমেশ্বর রচিত 'রাসমালা' ও 'কীর্তি কৌমুদী' সিংহলী উপাখ্যান 'দ্বীপবংশ' ও 'মহাবংশ' এবং রাজশেখর রচিত 'প্রবন্ধকোষ' বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বৈদেশিক বিবরণ (Accounts of foreign Travelers):
বিদেশি পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের বিবরণ থেকে প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বহু মূল্য উপাদান সংগৃহিত হয়। বিদেশি পর্যটকদের বিবরণ তিন শ্রেণির।
গ্রিক বিবরণ:
মেগাস্থিনিসের 'ইন্ডিকা' অজ্ঞাত পরিচয় গ্রিক নাবিকের লেখা 'পেরিপ্লাস অফ দ্য ইরিথ্রিয়ান সি' টলেমির ভূগোল, প্লিনি, কুইন্টাস, কার্টিয়াস, এ্যারিব্যান, প্লুটার্ক, ডায়োডোরাস প্রমুখ গ্রিক ও রোমান লেখকদের রচনা ও বিবরণ বিশেষভাবে স্মরনীয়।
চৈনিক ভ্রমণবৃত্তান্ত:
গুপ্তযুগে ফা-হিয়েন, হর্ষবর্ধনের আমলে হিউয়েন সাঙ ও ইৎ-সিং এর বিবরণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আরব পর্যটকদের বিবরণ:
মুসলিম পর্যটকদের মধ্যে আলবেরুনী রচিত 'তহকক-ই-হিন্দ' এবং আল মাসুদী, আল বিলাদুরি , সুলেমান, হাসান নিজামি প্রমুখদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বিভিন্ন সাহিত্যিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের সমন্বয়ে প্রাচীন ভারতের ধারাবাহিক যুক্তিনিষ্ঠ ইতিহাস রচিত হয়েছে। তবে সাহিত্যিক উপাদানগুলি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জনের হাতে পড়ে নানা সময়ে পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হয়েছে। তাই সাহিত্যিক উপাদানগুলি ব্যবহারের সময় খুবই সচেতন থাকতে হয়। কোনো সাহিত্যিক উপাদানের তথ্য প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের দ্বারা সমর্থিত হলে তা নিশ্চিত উপাদান হিসেবে গ্রহণ করা যায়। সাহিত্যিক উপাদানের এই ত্রুটি দূর করার জন্য প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের ওপর বেশি নির্ভরশীল হতে অসুবিধা নেই।
জীবন চরিত (Biography):
প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন রাজাদের জীবনচরিতগুলির মধ্যে বাণভট্ট রচিত 'হর্ষচরিত', সন্ধ্যাকর নন্দী রচিত 'রামচরিত' বিলহন রচিত 'বিক্রমাঙ্কদেবচরিত' বাকপতি রচিত 'গৌড়বহ' প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এই জীবনচরিতগুলি মূলত রাজাদের সভাকবিদের লেখা বলে পক্ষপাত দোষে দুষ্ট।
আঞ্চলিক ইতিহাস:
স্থানীয় বা আঞ্চলিকভাবে রচিত গ্রন্থের মধ্যে কাশ্মীরের উপর লিখিত কলহন রচিত 'রাজতরঙ্গিনী' সোমেশ্বর রচিত 'রাসমালা' ও 'কীর্তি কৌমুদী' সিংহলী উপাখ্যান 'দ্বীপবংশ' ও 'মহাবংশ' এবং রাজশেখর রচিত 'প্রবন্ধকোষ' বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বৈদেশিক বিবরণ (Accounts of foreign Travelers):
বিদেশি পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের বিবরণ থেকে প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বহু মূল্য উপাদান সংগৃহিত হয়। বিদেশি পর্যটকদের বিবরণ তিন শ্রেণির।
গ্রিক বিবরণ:
মেগাস্থিনিসের 'ইন্ডিকা' অজ্ঞাত পরিচয় গ্রিক নাবিকের লেখা 'পেরিপ্লাস অফ দ্য ইরিথ্রিয়ান সি' টলেমির ভূগোল, প্লিনি, কুইন্টাস, কার্টিয়াস, এ্যারিব্যান, প্লুটার্ক, ডায়োডোরাস প্রমুখ গ্রিক ও রোমান লেখকদের রচনা ও বিবরণ বিশেষভাবে স্মরনীয়।
চৈনিক ভ্রমণবৃত্তান্ত:
গুপ্তযুগে ফা-হিয়েন, হর্ষবর্ধনের আমলে হিউয়েন সাঙ ও ইৎ-সিং এর বিবরণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আরব পর্যটকদের বিবরণ:
মুসলিম পর্যটকদের মধ্যে আলবেরুনী রচিত 'তহকক-ই-হিন্দ' এবং আল মাসুদী, আল বিলাদুরি , সুলেমান, হাসান নিজামি প্রমুখদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বিভিন্ন সাহিত্যিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের সমন্বয়ে প্রাচীন ভারতের ধারাবাহিক যুক্তিনিষ্ঠ ইতিহাস রচিত হয়েছে। তবে সাহিত্যিক উপাদানগুলি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জনের হাতে পড়ে নানা সময়ে পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হয়েছে। তাই সাহিত্যিক উপাদানগুলি ব্যবহারের সময় খুবই সচেতন থাকতে হয়। কোনো সাহিত্যিক উপাদানের তথ্য প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের দ্বারা সমর্থিত হলে তা নিশ্চিত উপাদান হিসেবে গ্রহণ করা যায়। সাহিত্যিক উপাদানের এই ত্রুটি দূর করার জন্য প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের ওপর বেশি নির্ভরশীল হতে অসুবিধা নেই।
0 Comments: