INFO Breaking
Live
wb_sunny

Breaking News

অপরসায়নচর্চার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।

অপরসায়নচর্চার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।


আধুনিক বিজ্ঞানের একটি অন্যতম শাখা হল রসায়নবিদ্যা। প্রাচীন কাল থেকেই ব্যাবহারিক দিক থেকে রসায়নবিদ্যার চর্চা হলেও তা কখনোই বিজ্ঞান ও যুক্তিনির্ভর ছিল না। প্রাচীন কাল থেকে মধ্যযুগ পর্যন্ত সময়ে ইউরোপে যুক্তি ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাহীন যে ব্যাবহারিক রসায়নবিদ্যা চর্চিত হত, তা অপরসায়ন নামে পরিচিত। আধুনিক রসায়নবিদ লাইবিন বলেছেন, 'অপরসায়নও একটি বিজ্ঞান এবং পরীক্ষানিরীক্ষার মধ্য দিয়েই তার অগ্রগতি হয়েছে।'

অপরসায়নচর্চার কোনো যথার্থ বৈজ্ঞানিক ভিত্তি না-থাকলেও বিভিন্ন ব্যাবহারিক কারণে ও ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্র প্রস্তুতিতে এর গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। 

আধুনিক বিজ্ঞানের বীক্ষণাগার: অপরসায়নবিদ্যার সংস্কার করেই তা থেকে আধুনিক রসায়নের উৎপত্তি ঘটে। তাই অনেকে অপরসায়নবিদ্যাকে আধুনিক বিজ্ঞানের বীক্ষণাগার বলে থাকেন। তাঁরা প্রাকৃতিক বিভিন্ন পদার্থকে নিয়ে নানা মিশ্রণ তৈরি করে ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করতেন, যা মানুষের উপকারে লাগত। এইভাবেই পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়। 

নতুন আবিষ্কার: অপরসায়নবিদরাই সর্বপ্রথম বারুদ ও ধাতুবিদ্যা সংক্রান্ত নানা কৌশল আবিষ্কার করেন। প্যারাসেলসাস দস্তানামে ধাতব মৌল আবিষ্কার করেন। তারাই প্রথম অ্যান্টিমনি, আর্সেনিক ও বিসমাথ ইত্যাদি শনাক্ত করেন। 

চিকিৎসায় প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার: অপরসায়নবিদরা প্যানাসিয়া (Panacea) নামে একটি ওষুধ দিতেন মানুষকে যা সর্বরোগহর বলে দাবি করা হত। বাস্তবে তা প্রায় সবরকম রোগের প্রভাব কমাতেও পারত। অপরসায়নবিদ প্যারাসেলসাস প্লেগ মুক্তির জন্য যে কবচ দিতেন তাতে কোনোভাবেই বিজ্ঞানসম্মত ছিল না। কিন্তু তাঁর অনুগামীরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করতেন। আসলে তা আধুনিক রসায়ন চর্চার ভূমিকা প্রস্তুত করে। 

মূল্যায়ন: উক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায় যে, জাদুবিদ্যার মাধ্যমে হলেও প্রকৃতিগতভাবে অপরসায়নচর্চা আধুনিক বিজ্ঞানের অভিমুখ নির্দেশ করেছিল। আধুনিক রসায়নবিদ্যার অগ্রগতিতে অপরসায়ন বিদ্যার অবদান অনস্বীকার্য। 

0 Comments: