স্বাভাবিক বাঁধ কাকে বলে?
সমভূমি ও বদ্বীপ প্রবাহে নদী ধীরগতিতে প্রবাহিত হয় বলে জলের সঙ্গে যেসব পলি, বালি, কাদা প্রভৃতি বাহিত হয়ে আসে নদী আর সেগুলি বহন করতে পারে না। সেগুলি নদীর দুই তীরে সঞ্চিত হতে থাকে। এ ছাড়া বন্যা শেষে দুই তীরে ছড়িয়ে পড়া প্লাবনের জল নদীতে ফিরে এলে নদীবাহিত পলি, কাদা প্রভৃতি নদীর কিনারায় এসে সঞ্জিত হয়। উভয় কারণেই ক্রমাগত নদীর দুই তীরে পলি সঞ্চিত হওয়ার ফলে তা বাঁধ বা স্বল্পোচ্চ শৈলশিরার মতাে ভূমিরূপ সৃষ্টি করে। এই বাঁধ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয় বলে একে বলা হয় 'স্বাভাবিক বাঁধ' (natural levee)।
উদাহরণঃ মধ্য ও নিম্ন গতিতে গঙ্গা নদীর দুই তীরে এবং মিশরে নীল নদের দুই পাশে উঁচু স্বাভাবিক বাঁধ দেখা যায়।
স্বাভাবিক বাঁধের উৎপত্তিঃ
নদী তার নিম্নগতিতে সমুদ্রের কাছাকাছি চলে এলে ভূমির ঢাল হ্রাস পায় এবং নদীবাহিত সূক্ষ্ম কর্দম, পলি, বালি প্রভৃতি নদীগর্ভে সঞ্চিত হতে থাকে। ফলে নদীবক্ষ ভরাট হয়ে নদীর গভীরতা ক্রমশ কমে যায়। এমতাবস্থায়, বর্ষাকালে নদীতে হঠাৎ জল বেড়ে গেলে এই অগভীর উপত্যকা ছাপিয়ে নদীর দুই কূলের নীচু জমি প্লাবিত হয়। কিছুদিন পর এই প্লাবনের জল সরে গেলে নদীবাহিত পলি, বালি, কর্দম প্রভৃতি নদীর দুই তীরে সঞ্চিত হয়। এইভাবে ক্রমশ বছরের পর বছর নদীর তীরে এইরূপ সঞ্চয়ের ফলে ধীরে ধীরে বাঁধের মত উঁচু হয়ে যায় ও প্রাকৃতিকভাবে স্বাভাবিক বাঁধ বা লেভি সৃষ্টি হয়।
0 Comments: